একদম বিশ্বাস করবেন না। সব মিথ্যা। সব সাজানো।
গণশক্তি
গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মণবাটির বাসিন্দা আবদুস মুকিদ পেশায় গ্রামের কোয়াক ডাক্তার হলেও তিনি নিজে একজন তৃণমূল কর্মী। তাঁর বাবা, ভাই সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। আবদুল মুকিদ বৈদ্যর ভাই সাহিদ বৈদ্য গোটরা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। বাবা ভাইয়ের রাজনৈতিক পরিচয় কাজে লাগিয়েই গোটরা এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে জমা দিয়েছেন সারদা গোষ্ঠীর ফান্ডে। এই মুহূর্তে তার ৬লক্ষ টাকা কোম্পানির ঘরে জমা পড়ে রয়েছে। ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না তিনি। (সূত্র: গণশক্তি)
বসিরহাটের ২নং ব্লকের বাসিন্দা সারদা গোষ্ঠীর আর এক ডিও আবদুল্লা মণ্ডলও তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা। বসিরহাট উত্তরের তৃণমূলী বিধায়কও আবদুল্লার ঘনিষ্ঠ। গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনিও তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন সি পি আই (এম)কে হারাতে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচও করেছিলেন। (সূত্র: গণশক্তি)
স্বরূপনগর ব্লকের গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সারদার এজেন্ট তরুণ মণ্ডল এবারের পঞ্চায়েত ভোটে ছিল সম্ভাব্য তৃণমূল প্রার্থী। ঠিক ছিল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৬নম্বর বুথে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এলাকার ক্ষুব্ধ মানুষ জানাচ্ছেন বেপাত্তা হয়েছে সেও। একই অঞ্চলের বাসিন্দা যশপাল সরকার তৃণমূল কর্মী। সেও নিখোঁজ। এঁরা সকলেই তৃণমূলের রাজ্যনেতা নারায়ণ গোস্বামীর ঘনিষ্ঠ। গ্রামের মানুষ জানাচ্ছেন শাসকদলের প্রভাব খাটিয়েই এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিল তারা। (সূত্র: গণশক্তি)
বসিরহাটের মুনসির বাগানে সারদা গোষ্ঠীর দপ্তর ভাঙচুর করেছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। স্বরূপনগর ব্লকের হাকিমপুর হাই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তৃণমূল নেতা কার্তিক ঘোষ এই ঘটনার পর থেকেই হয়েছে বেপাত্তা। সারদা গ্রুপের এজেন্ট ছিল সে। তার সঙ্গেই মনতোষ সরকার ও জয়ন্ত ঘোষ দুই সক্রিয় তৃণমূল কর্মী তথা সারদা গোষ্ঠীর এজেন্টও এখন ফেরার। (সূত্র: গণশক্তি)
হাওড়ার ডোমজুড় থানা এলাকার ভাণ্ডারদহ গ্রামের লস্করপাড়ার সালাম লস্কর নামে এক দর্জি শ্রমিক জানিয়েছেন, এজেন্ট দীপক পালের মাধ্যমে তাঁর স্ত্রী সাহানারা বেগমের নামে তিনটি পাসবই করেছিলেন। মোট ২৩৬০০টাকা জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে দু’টি মে মাসে মেয়াদ পূরণ করে টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু এই ঘটনার পর থেকে এজেন্ট নিজেই সপরিবারে বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল। তখন সদ্য সরকারে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সন্দেহ প্রকাশ করায় তৃণমূল নেতা মুকুল রায়, রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্ররা এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বলে জানান দীপক। এমনকি সারদার দপ্তরে নিয়ে গিয়ে মদন মিত্র, মুকুল রায়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ভাণ্ডারদহ মুখার্জিপাড়ার বাসিন্দা দীপক। তৃণমূলের সাংসদ অভিনেত্রী শতাব্দী রায়ও যে তাদের সংস্থার সাথে যুক্ত সেকথাও জানিয়েছিল দীপক। (সূত্র: গণশক্তি)
বারাসতের কদম্বগাছিতে প্রচুর জমি কিনে কারখানা বানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। জমি কেনার সময়ে এলাকার লোকদের চাকরির টোপ দিয়েছেন। কিন্তু কেউ চাকরি পাননি। কদম্বগাছির বাসিন্দা আবদুর রহিম বলছেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে সুদীপ্ত সেন প্রচুর জমি দখল করেছিলেন। কিন্তু একজনও সেখানে চাকরি পায়নি। আমরা এই নিয়ে তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীদের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু সারদার এক কর্তা এখন তৃণমূলের সংসদ সদস্য। তাই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। (সূত্র: বর্তমান)
নিউ ব্যারাকপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান নির্মিকা বাগচি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সারদা গ্রুপে এজেন্ট হিসেবে ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি তুলেছেন তিনি। পুরপ্রধান হওয়ার পরে তিনি বিভিন্ন প্রোমোটারকে দিয়ে ওই সংস্থায় লগ্নিও করিয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, ওই প্রোমোটারদের আবার পাল্টা নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন পুরপ্রধান। (সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা)
একই অভিযোগ শিলিগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মার বিরুদ্ধেও। এ দিন সেবক রোডে সারদা গোষ্ঠীর অফিসের সামনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন এজেন্ট ও আমানতকারীরা। অনেককে চেঁচিয়ে বলতে শোনা যায়, “টাকা জমা রাখার আগে এলাকার অনেক তৃণমূল নেতার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ওঁরা সারদা গ্রুপ পালাবে না বলে ভরসা দিয়েছিলেন। এখন নেতারা আমাদের দেখুন।” বিক্ষোভে ছিলেন রঞ্জনবাবুর নিজের এলাকা ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁদের বলতে শোনা যায়, “আমরা কাউন্সিলরের সঙ্গে পরামর্শ করেই অনেক কাজ করি। এ ক্ষেত্রেও আগে কথা বলেছিলাম। তার পরেও বিপদে পড়তে হল।” (সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা)
বসিরহাটের টাকি রোডে থাকেন বেসরকারি এক জাহাজ সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী নিমর্লকুমার রায় ও তার স্ত্রী ভারতীদেবী। চাকরি শেষে যে টাকা পেয়েছিলেন তা খরচ হয়েছিল মেয়ের বিয়ে ও বাড়ি তৈরিতে। সামান্য টাকায় সংসার চালানোর ফাঁকে আচমকাই তাঁরা ওই অর্থলগ্নি সংস্থার লোভনীয় প্রস্তাব পান। ২০০৯ সালের অগস্টে পঞ্চাশ হাজার টাকা এমআইএস করেন তিনি। পরে ২০১২ সালে নিজের নামে আরও এক লাখ টাকা রাখেন। কেন, নিছকই লোভ? নির্মলবাবু বলেন, “ওই সংস্থায় শাসক দলের অনেক নেতা জড়িত। অনেকেই ভরসা জুগিয়েছিলেন, টাকা মার যাওয়ার ভয় নেই। তাই টাকা দিয়েছিলাম।” (সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা)
No comments:
Post a Comment